শনিবার, ৩০ মে, ২০১৫












                                প্রবাসের কান্না



                                                পর্ব :  তৃতীয় 



                                              সন্তান অধ্যায়



                         একদিনের ঘটনা ।   হাজার হাজার মাইল দূরে বসে  আমার ছোট্র বাবাকে বার বার 

মনে পড়ছে । এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছি । মনে হচ্ছে, দেয়ালের ঐ পাশেই আমার পরান আছে ।

যেন আমাকে   "বাবা বাবা " বলে ডাকছে । আমি তো জানি, সে  ঐ পাশে নাই । কিন্তু কিছুতেই

কাজে মন দিতে পারছি না । কিন্তু হঠাৎ আমি নিজেকে দেয়ালের ঐ পাশেই  আবিস্কার  করলাম ।

মনের ভুলে  কখন যে ঐ পাশে চলে গেলাম টেরও পেলাম না। 


                           পৃথিবীটা  বুঝি এ রকমই। সবই আমার ভাগ্য। হায়রে আমার কপাল। হায়রে 

জীবন ! আমার আদরকে হাজার হাজার মাইল  দূরে রেখে আমি কিভাবে দিন যাপন করি?

কয়টা টাকা  উপার্জনের জন্য আমাকে এত কষ্ট করতে হচ্ছে ! দেশে কোনভাবে সামান্য  

উপার্জনের ব্যবস্থা থাকলেও আমি এ দূর প্রবাসে থাকতাম না। 


                          সন্তান, স্ত্রী, পিতা-মাতা, ভাই-বোনদের সহচার্য ছাড়া কী পৃথিবীতে দিনানিপাত করা

যায় ? মানুষ কি পারে আপনজন ছাড়া বেচেঁ থাকতে  ? আমি তো মানুষই । মানুষের স্বাভাবিক

স্বভাব - রুচি  তো আমারও আছে । এভাবে কত দিন কাটাব  ? সামান্য কয়েক মিনিট মোবাইল

আলাপে  কি মন ভরে ? চাক্ষুষ কথোপকথন আর যান্ত্রিক কথোপকথন কি সমান  ? 


                            কখনো তো এমনও হয়, সামান্য মোবাইল আলাপের পর মনের দূর সঙ্গ  বেদনা

আরো বেড়ে যায় । এভাবেই দিন কাটাতে হচ্ছে। উপার্জনের  আশায়  । আর উপার্জন তো আমার

সন্তানের ভবিষ্যতের আশায় , আমার স্বজনদের জন্যই  তো । আমার আদরের পড়াশোনার  জন্য

তো অর্থের প্রয়োজন । অর্থ তো উড়ে আসে না ,  পরিশ্রম  দিয়ে অর্জন হয় আল্লাহর রহমতে ।

এজন্যই তো আমার এত চেষ্টা  । 



                     ( চলবে)


                                        রচয়িতা : ডা.  মুহাম্মদ হেলাল  উদ্দিন

!