প্রবাসের কান্না
পর্ব : তৃতীয়
সন্তান অধ্যায়
একদিনের ঘটনা । হাজার হাজার মাইল দূরে বসে আমার ছোট্র বাবাকে বার বার
মনে পড়ছে । এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছি । মনে হচ্ছে, দেয়ালের ঐ পাশেই আমার পরান আছে ।
যেন আমাকে "বাবা বাবা " বলে ডাকছে । আমি তো জানি, সে ঐ পাশে নাই । কিন্তু কিছুতেই
কাজে মন দিতে পারছি না । কিন্তু হঠাৎ আমি নিজেকে দেয়ালের ঐ পাশেই আবিস্কার করলাম ।
মনের ভুলে কখন যে ঐ পাশে চলে গেলাম টেরও পেলাম না।
পৃথিবীটা বুঝি এ রকমই। সবই আমার ভাগ্য। হায়রে আমার কপাল। হায়রে
জীবন ! আমার আদরকে হাজার হাজার মাইল দূরে রেখে আমি কিভাবে দিন যাপন করি?
কয়টা টাকা উপার্জনের জন্য আমাকে এত কষ্ট করতে হচ্ছে ! দেশে কোনভাবে সামান্য
উপার্জনের ব্যবস্থা থাকলেও আমি এ দূর প্রবাসে থাকতাম না।
সন্তান, স্ত্রী, পিতা-মাতা, ভাই-বোনদের সহচার্য ছাড়া কী পৃথিবীতে দিনানিপাত করা
যায় ? মানুষ কি পারে আপনজন ছাড়া বেচেঁ থাকতে ? আমি তো মানুষই । মানুষের স্বাভাবিক
স্বভাব - রুচি তো আমারও আছে । এভাবে কত দিন কাটাব ? সামান্য কয়েক মিনিট মোবাইল
আলাপে কি মন ভরে ? চাক্ষুষ কথোপকথন আর যান্ত্রিক কথোপকথন কি সমান ?
কখনো তো এমনও হয়, সামান্য মোবাইল আলাপের পর মনের দূর সঙ্গ বেদনা
আরো বেড়ে যায় । এভাবেই দিন কাটাতে হচ্ছে। উপার্জনের আশায় । আর উপার্জন তো আমার
সন্তানের ভবিষ্যতের আশায় , আমার স্বজনদের জন্যই তো । আমার আদরের পড়াশোনার জন্য
তো অর্থের প্রয়োজন । অর্থ তো উড়ে আসে না , পরিশ্রম দিয়ে অর্জন হয় আল্লাহর রহমতে ।
এজন্যই তো আমার এত চেষ্টা ।
( চলবে)
রচয়িতা : ডা. মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন
!